আউটসোর্সিং কী?

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

আউটসোর্সিং কী?



আউটসোর্সিং: এ টু জেড সম্পূর্ণ বিশ্লেষণ

ভূমিকা

বর্তমান বিশ্বে আউটসোর্সিং এক নতুন বিপ্লবের সূচনা করেছে। বড় বড় কোম্পানি থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলোও এখন আউটসোর্সিংয়ের সুবিধা গ্রহণ করছে। বিশেষ করে ডিজিটাল যুগের আগমনে আউটসোর্সিং আগের চেয়ে আরও সহজ এবং কার্যকর হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশেও আউটসোর্সিং কর্মসংস্থানের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

আউটসোর্সিং কী?

আউটসোর্সিং হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান তাদের নির্দিষ্ট কিছু কাজ বাহ্যিক সংস্থার (তৃতীয় পক্ষ) মাধ্যমে করিয়ে থাকে। এটি মূলত খরচ কমানো, দক্ষ জনবল ব্যবহার এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করার জন্য ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, কাস্টমার সার্ভিস, ডাটা এন্ট্রি ইত্যাদি কাজে অনেক কোম্পানি আউটসোর্সিং করে থাকে।

আউটসোর্সিং-এর প্রকারভেদ

আউটসোর্সিং বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, এর মধ্যে কিছু প্রধান ধরন নিচে আলোচনা করা হলো:

  1. বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (BPO): সাধারণত ব্যাক-অফিস কাজ যেমন গ্রাহক সেবা, অ্যাকাউন্টিং, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি এর অন্তর্ভুক্ত।

  2. আইটি আউটসোর্সিং (ITO): সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, সার্ভার মেইনটেন্যান্স ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।

  3. নলেজ প্রসেস আউটসোর্সিং (KPO): গবেষণা, ডাটা অ্যানালাইসিস, মার্কেট রিসার্চ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।

  4. ম্যানুফ্যাকচারিং আউটসোর্সিং: পণ্য উৎপাদনের বিভিন্ন ধাপ তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে সম্পন্ন করা।

  5. ক্রিয়েটিভ ও ডিজিটাল আউটসোর্সিং: গ্রাফিক ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, কন্টেন্ট রাইটিং ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।

আউটসোর্সিং-এর সুবিধা

আউটসোর্সিং-এর মাধ্যমে ব্যবসাগুলো নানাভাবে উপকৃত হয়। এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হলো:

  • খরচ সাশ্রয়: লোকাল স্টাফ নিয়োগের তুলনায় আউটসোর্সিং কম খরচে বেশি দক্ষ কর্মী পেতে সাহায্য করে।

  • কেন্দ্রীভূত কার্যক্রম: ব্যবসাগুলো তাদের মূল দক্ষতার দিকে মনোযোগ দিতে পারে।

  • বিশ্বব্যাপী প্রতিভার ব্যবহার: আউটসোর্সিং-এর মাধ্যমে সেরা ট্যালেন্ট নিয়োগ করা সম্ভব হয়।

  • উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি: অধিক পরিমাণে কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব।

  • সার্বক্ষণিক পরিষেবা: অনেক আউটসোর্সিং সংস্থা ২৪/৭ সাপোর্ট প্রদান করে।

আউটসোর্সিং-এর চ্যালেঞ্জ

আউটসোর্সিং-এর কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে, যা বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ:

  • গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা ঝুঁকি: সংবেদনশীল তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে ঝুঁকি থাকে।

  • মান নিয়ন্ত্রণ: সবসময় প্রত্যাশিত মানের কাজ পাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে।

  • ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক পার্থক্য: আন্তর্জাতিক ফ্রিল্যান্সারদের সাথে কাজ করতে কিছু চ্যালেঞ্জ দেখা দিতে পারে।

  • নিয়ন্ত্রণের অভাব: বাহ্যিক টিমের উপর সরাসরি নিয়ন্ত্রণ রাখা কঠিন হতে পারে।

বাংলাদেশে আউটসোর্সিং-এর বর্তমান অবস্থা

বাংলাদেশ বর্তমানে আউটসোর্সিং খাতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী অন্যতম প্রধান দেশ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। গুগল, আমাজন, ফেসবুকসহ অনেক বড় সংস্থার জন্য বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করছেন।

জনপ্রিয় আউটসোর্সিং প্ল্যাটফর্মসমূহ:

  • Upwork

  • Fiverr

  • Freelancer

  • PeoplePerHour

  • Toptal

কিভাবে আউটসোর্সিং শুরু করবেন?

আউটসোর্সিং-এর মাধ্যমে কাজ শুরু করতে চাইলে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

  1. নির্দিষ্ট একটি দক্ষতা অর্জন করুন: ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, কন্টেন্ট রাইটিং ইত্যাদি শিখুন।

  2. একটি প্রোফাইল তৈরি করুন: Upwork, Fiverr, Freelancer-এর মতো প্ল্যাটফর্মে একটি আকর্ষণীয় প্রোফাইল তৈরি করুন।

  3. নেটওয়ার্কিং করুন: সোশ্যাল মিডিয়া ও পেশাদার কমিউনিটিতে সংযুক্ত হোন।

  4. ছোট ছোট কাজ দিয়ে শুরু করুন: প্রথমদিকে কম দামে কাজ নিন এবং ভালো ফিডব্যাক সংগ্রহ করুন।

  5. নিজেকে আপডেট রাখুন: নতুন টুল ও ট্রেন্ড সম্পর্কে জানুন।

উপসংহার

আউটসোর্সিং বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় কর্মসংস্থান মাধ্যম। এটি দক্ষ ও পরিশ্রমী ব্যক্তিদের জন্য একটি বড় সুযোগ তৈরি করেছে। বাংলাদেশে এই খাতে আরও উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে এবং যারা এই সুযোগ গ্রহণ করতে চান, তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ ক্যারিয়ার হতে পারে।

Post a Comment

0 Comments